Blog Details

গ্লকোমাক্রান্ত তাসিন।

গ্লকোমাক্রান্ত তাসিন।

  • 22 Mar 2023
  • Glucoma

পৃথিবীতে যেদিন প্রথম চোখ খুললাম সব কিছু কেমন যেনো  অস্পষ্ট ছিলো। বাবা, আম্মু, আপু, দাদু,নানু কাউকেই পরিষ্কার দেখতে পারছিলাম না। সবকিছুই অস্পষ্ট,ঝাপসা অনূভুত হতো।
আমার চোখ লাল হয়ে যেতো,প্রচন্ড ব্যাথা করতো, মাথাও মাঝে মাঝে অসহনীয় যন্ত্রনা হতো। আলোর দিকে তাকাতেই পারতাম না প্রচন্ড মাথা ব্যাথার জন্য। আলোর চারিপাশে রংধনুর মতো লাগতো।
যখন হাঁটতাম প্রায়শই অন্যদের সাথে ধাক্কা লাগতো ঝাপসা দেখার কারনে। খুবই বিব্রত হতাম। আমার বাবা- আম্মু বিষয়টা লক্ষ্য করেন। তারা একসময় বুঝতে পারেন যে আমি চোখে কম দেখি। তাই তারা আমাকে একজন ডক্টরের কাছে নিয়ে যায়। ডক্টর  চোখ দেখে বল্লেন কিছু পরীক্ষা করা দরকার। এরপর পরীক্ষাগুলো করিয়ে আনা হলো। রিপোর্ট দেখে ডক্টর জানালেন আমার চোখে জন্মগত গ্লকোমা রয়েছে। যার জন্য চোখের প্রেসার অনেক বেড়ে যায়। এতে এক সময় অন্ধ হয়ে যেতে পারে। আর গ্লকোমাজনিত কারনে একবার অন্ধ হলে ওই দৃষ্টি আর ফেরত আসে না।

বাবা শুনে কিছুটা ভয় পেলেন। কিছুক্ষণ পর ডক্টরকে জিজ্ঞেস করলো, কিভাবে আমি ঠিক হতে পারবো?  সব কি স্বভাবিকভাবে দেখতে পারবো? ডক্টর বললেন অপারেশন করার পর আমি স্বাভাবিকভাবে সব দেখতে পারবো। বাবা তখনই বললেন - তাহলে পরের ডেটেই অপারেশন করাতে চান। ২ দিন পর আমার চোখে অপারেশন করা হয়। 
এখন আমার চোখের প্রেসার কমে গেছে। স্পষ্টভাবে বাবা, আম্মু, আপু,নানু দাদু, আমার বিড়াল  লিও সবাইকেই দেখতে পারি। এখন আর হাঁটতে গিয়ে হোটচ খাই না। আলোর দিকে তাকাতে আর চোখে তীব্র ব্যাথা অনূভুত হয় না। এখন আমার জীবনটা আর ঝাপসা নাাা রঙে রঙ্গিন!!!

About Author

প্রফেসর ড. সিদ্দিকুর রহমান। 

গ্লকোমা স্পেশালিষ্ট, ফ্যাকো এবং ল্যাসিক সার্জন,

ভিশন আই হসপিটাল।

Comments

  • No Comment

Leave Comment

//